ব্যানার বিজ্ঞাপন দেয়ার জন্য যোগাযোগ করুন

04 July 2018

এন্ড্রয়েড ফোন কিনতে চাইয়ে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখা দরকার । Things to keep in mind when buying an Android phone ।

আপনি যদি স্মার্টফোন কিনতে চান, তবে বাজারের প্রচুর পরিমাণ স্মার্টফোনের ভীড়ে আপনি অবশ্যই নিজেকে গুলিয়ে ফেলবেন । কারণ এখন প্রতিটি স্মার্টফোনে এমন নতুন নতুন বিষয় সংযুক্ত হচ্ছে যেগুলোর কারণে কোনটাকে বাদ দিয়ে কোনটা কিনবেন তা নিরূপণ করা কঠিন হয়ে পড়ে । ২০১৮ সালে এসে স্মার্টফোন কোন বিলাসিতা কিংবা আয়েশের বস্তু নয় বরং এটা আপনার ডিজিটাল লাইফের জন্য অত্যাবশ্যক এক যন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে । অনেকের আবার এখন নতুন স্মার্টফোন কেনা কিংবা দুই দিন পর পর স্মার্টফোন বদলানোটা শখ হয়ে দাঁড়িয়েছে । সবার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কিন্তু এক না । অধিকাংশ ব্যবহারকারীই নতুন স্মার্টফোন কেনার আগে বাজেট, ফিচার, স্থায়িত্ব অন্যান্য বিষয় চিন্তা করে থাকেন । একটি স্মার্টফোন অনেকগুলো যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি । সব সার্ভিস বা ফিচার আপনার পক্ষে চেক করা সম্ভব না । কিন্তু এই পোস্টে দেয়া বিষয়গুলো নতুন স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে না দেখলেই নয় । একটি ভালো স্মার্টফোন কেনার সময় যে সকল বিষয় খেয়াল করতে হয় তা নিম্নে আলোচিত হল ।
দাম বাজেট সবার আগে যেটি খেয়াল রাখতে হবে সেটি হলো ফোনের জন্য আপনার বাজেট । স্মার্টফোন কিনতে আপনি কত টাকা খরচ করতে চান এবং সেই দামের মধ্যে কোন স্মার্টফোনটিতে সবচেয়ে বেশি ফিচার পাচ্ছেন সেটাই হবে আপনার জন্য বেস্ট ডিল । কারন আপনার বাজেট কম হলে হয়তো একটা স্মার্টফোনে লেটেস্ট সব টেকনোলজি কিংবা সব ফিচার পাবেননা, আর এটাই স্বাভাবিক । সেক্ষেত্রে একটু বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করে আপনার বাজেটে কোন কোম্পানির কোন মডেলটি সবচেয়ে ভালো জিনিস দিচ্ছে সেটা নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ । তবে আপনার বাজেট লিমিটেশন না থাকলে ভালো কোনো কোম্পানির লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপ মডেলটাই নেয়া উচিত । সেক্ষেত্রে আপনার চয়েজ করাও অনেকটা সহজ আর লেটেস্ট সব টেকনোলজিও পাচ্ছেন । আর সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ফ্ল্যাগশিপগুলো থাকায় আপনি ভালো সাপোর্টও পাবেন । স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে অপারেটিং সিস্টেম বাছাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ন । কারণ আপনার ফোনের সফটওয়্যার রিলেটেড সকল এক্সপেরিয়েন্স এই অপারেটিং সিস্টেমের উপরই নির্ভর করবে । বর্তমানে ব্যবহারকারী সংখ্যা বিচারে এন্ড্রয়েড ও এস চালিত স্মার্টফোনের পরিমাণই সবচেয়ে বেশি । গুগলের তৈরি এই অপারেটিং সিস্টেমটি অনেক ফ্লেক্সিবল ফ্রি হওয়াতে ছোট বড় সব কোম্পানিই এই ও এস ব্যবহার করে । আধুনিক সব ফিচারই এতে আছে আর প্রায় সকল মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপারই এন্ড্রয়েডের জন্য তাদের অ্যাপ তৈরি করে । অ্যাপলের আই ও এস খুবই জনপ্রিয় এবং ফিচারবহুল । এর অ্যাপ স্টোরও অনেক সমৃদ্ধ । তবে অ্যাপলের ডিভাইসগুলোর দাম তুলনামূলক বেশি হওয়াতে সব শ্রেণির মানুষ এগুলো ব্যবহারের সুযোগ পায়না । এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে । যেমন-মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ, সেইলফিশ ওএস, ফায়ারফক্স ওএস ইত্যাদি । তবে প্রয়োজনীয় ডেভেলপার এনগেজমেন্ট না থাকায় এন্ড্রয়েড আইওএস ব্যতীত অন্য কোনো অপারেটিং সিস্টেমের ফোন এখন না কেনাটাই যুক্তিযুক্ত । সিস্টেম অন চিপ বা প্রচলিত সহজ কথায় সিপিইউ । এটি স্মার্টফোনের ব্রেইন । এর মাঝেই ইন্টিগ্রেটেড থাকে আপনার স্মার্টফোনের প্রসেসর, গ্রাফিক প্রসেসর, ক্যাশ বিভিন্ন ওয়্যারলেস মডিউল । এটাকে চিপসেট আবার অনেকে শুধু প্রসেসর বলেন । তো বুঝতেই পারছেন এর গুরুত্ব কতখানি । আপনার স্মার্টফোনের সব ডেটা প্রসেসরই প্রসেস করে দেয় । আর এখনকার স্মার্টফোনগুলো শুধু কল কিংবা ব্রাউজিং করার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয় । তাই স্মার্টফোনের ডেটা দ্রুত প্রসেস করার জন্য আপনার চাই শক্তিশালী একটি প্রসেসর । আপনি নিশ্চয়ই কোনো একটি অ্যাপ এর আইকনে ট্যাপ করে সেটা ওপেন হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে চাইবেন না ! প্রসেসরের ভালো মন্দ নির্ভর করে প্রসেসরের ক্লক স্পিড, এর কোর সংখ্যা সাথে  আরো কয়েকটি বিষয়ের উপর । বিভিন্ন কোম্পানি স্মার্টফোনের জন্য চিপসেট তৈরি করে । যেমন-ইন্টেল, কোয়ালকম, স্যামসাং, হুয়াওয়ে, অ্যাপল, মিডিয়াটেক ইত্যাদি । মোবাইলের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারী বিচারে মিডিয়াটেক এগিয়ে থাকলেও পারফরমেন্স বিচারে কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন সিরিজের চিপসেটই সবচেয়ে জনপ্রিয় । স্ন্যাপড্রাগন এর ব্যাটারি ব্যাকআপও তুলনামূলক ভালো । এছাড়া স্যামসাং এর এক্সিনস, হুয়াওয়ে এর কিরিন বেশ ভালো প্রতিযোগিতা করছে । আর অ্যাপল তাদের ফোনে নিজেদের শক্তিশালী প্রসেসর ইউজ করে । তাই আপনি যদি আপনার মোবাইলে রেগুলার মাল্টিটাস্কিং বা গেমিং করেন তাহলে ভালো একটি চিপসেট সম্বলিত মোবাইল অবশ্যই কিনবেন । সাথে কোন মডেলের জিপিইউ রয়েছে সেটাও দেখে নিবেন । আগেই বলে রাখছি-ফোন, পিসি বা এরকম ইলেকট্রনিকস ডিভাইসে মেমোরি দুই ধরনের । একটা হচ্ছে রম আরেকটা হচ্ছে র‌্যাম । র‌্যাম হল অস্থায়ী মেমোরি যাতে প্রসেসর ডেটাগুলোকে অস্থায়ীভাবে জমা রাখে । তাই র‌্যামের পরিমাণ সাধারণত রম বা স্টোরেজের চেয়ে অনেক কম হয় । র‌্যাম যত বেশি হবে আপনার ফোনও তত স্মুদলি চলার সম্ভাবনা বেশি হবে । পাশাপাশি ব্যাকগ্রাউন্ডেও আপনি অনেক অ্যাপ চালু রাখতে পারবেন ।
সাধারণত বর্তমানে লো-এন্ড স্মার্টফোনেও জিবি র‌্যাম থাকে । তবে জিবি র‌্যামের স্মার্টফোন না কেনাটাই ভালো । মিডরেঞ্জ ফোনে থেকে জিবি কিছু কিছু ফ্ল্যাগশিপ ফোনে - জিবি পর্যন্ত র‌্যাম থাকে । তবে বেশি দাম দিয়ে বেশি র‌্যামওয়ালা ফোন কেনার আগে আপনার আসলেই এতো পরিমাণ র‌্যাম লাগবে কি না কিংবা আপনার প্রসেসর এই র‌্যাম এর যথার্থ ব্যবহার করতে পারবে কি না সেটাও বিবেচ্য । বর্তমানে মধ্যম দামের এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন কিনলে ২-জিবি র‌্যামের নিচে না কেনাই ভাল । যদি ফ্ল্যাগশিপ ফোন কেনেন, তাহলে র‌্যামের ব্যাপারে এত না ভাবলেও চলবে । অপরদিকে রম বা স্টোরেজের কথা বিবেচনা করলে ভাবতে হবে, এখানে আপনার অপারেটিং সিস্টেম অ্যাপস থাকবে এবং এর বাকি অংশ আপনার ইন্টারনাল স্টোরেজ হিসেবে ব্যবহৃত হবে যাতে আপনি অ্যাপ, ছবি, ভিডিও, ফাইল ইত্যাদি রাখতে পারবেন । এটা আপনার প্রয়োজনমত নিতে পারেন । তবে ১৬ জিবির কম স্টোরেজের ফোন না নেয়াই ভাল এবং ফ্ল্যাগশিপগুলোতে আপনি আজকাল ২৫৬ জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ পাচ্ছেন । যেসব ফোনে মাইক্রোএসডি বা মেমরি কার্ড স্লট আছে সেসব ফোন কিনলে আপনাকে স্টোরেজ নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না । স্মার্টফোনগুলোতে সব ইন্টার‌্যাকশন মূলত এর স্ক্রিন দিয়েই হয় । তাই এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । স্মার্টফোনের স্ক্রিন আজকাল পাঁচ থেকে সাড়ে ছয় ইঞ্চি পর্যন্ত কমন ধরা হয়। আপনি এক হাতে ফোন ইউজ করতে চাইলে সাড়ে পাঁচ ইঞ্চির উপরে না যাওয়াই ভালো । বেশি রেজ্যুলেশনের ডিসপ্লেতে কন্টেন্ট বেশি স্পষ্ট ঝকঝকে দেখায়। তাই কমপক্ষে এইচডি রেজ্যুলেশনের ডিসপ্লে নেয়া ভালো । আজকাল ভাল মানের ফোনগুলোতে ফুল এইচডি থেকে শুরু করে ৪কে রেজ্যুলেশনের ডিসপ্লেও পাওয়া যায়। স্ক্রিনের দৈর্ঘ্য প্রস্থের অনুপাতও বিবেচ্য বিষয় । আধুনিক স্মার্টফোনের ডিসপ্লের এস্পেক্ট রেশিও ১৮: কিংবা ১৮.: হয় যা আগের ১৬: এস্পেক্ট রেশিওর ফোনের চেয়ে বেশি চিকন । ফলে হাতে ধরতেও সহজ আবার দেখতেও সুন্দর লাগে । আপনার ফোনের প্যানেলটি কি এলসিডি, ওলেড নাকি এমোলেড সেটিও দেখতে পারেন । কারণ একেক প্রযুক্তির ডিসপ্লেতে একেক ধরনের ফিচার রয়েছে । এলসিডি স্ক্রিনের ফোনের দাম এমোলেড কিংবা ওলেড স্ক্রিনের চেয়ে তুলনামূলক কম । ফোন কেনার আগে দোকানের স্যাম্পল ডিভাইসে অবশ্যই স্ক্রিন কোয়ালিটি দেখে নিবেন । মধ্যবিত্তের ডি.এস.এল.আর বা মিররলেস ক্যামেরার স্বপ্ন পূরণ করছে স্মার্টফোন ক্যামেরা । স্মার্টফোনের ক্যামেরাগুলো আজকাল ভালোই উন্নতি করেছে । একসময় স্মার্টফোনের সামনে একটা পিছনে আরেকটা ক্যামেরা থাকলেও আজকাল শুধু পিছনেই থেকে টি ক্যামেরাও চোখে পড়ে । স্মার্টফোনের ক্যামেরার রেজ্যুলেশন যত বেশি বা মেগাপিক্সেল যত বেশি হবে স্মার্টফোনে তোলা ছবি তত বড় ডিসপ্লেতে দেখতে সুবিধা তত বেশি । তবে মেগাপিক্সেলই সবকিছু নয় । ক্যামেরার অ্যাপারচার কিংবা আইএসও সেন্সিটিভিটি এর কথাও মাথায় রাখতে হবে । বড় এপারচার এর ক্যামেরা ফোন কিনলে সেটি বেশি আলো গ্রহণ করতে পারবে ফলে কম আলোতেও ভালো ছবি তুলতে পারবে । পিক্সেল সাইজ যাতে বড় থাকে সেটাও একই কারণে লক্ষণীয় । ভিডিওর ক্ষেত্রে আপনার মেইন ক্যামেরা যেন অন্তত ৩০ ফ্রেমস/সেকেন্ড রেটে ১০৮০পি রেজুলেশনে ভিডিও করতে পারে সেটা খেয়াল রাখবেন । আর ৪কে রেজুলেশনের ভিডিও করতে পারলেতো সেটা খুবই ভালো । অনেক স্মার্টফোনে ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন ফিচার থাকে বলে ভিডিও কাঁপেনা । এই ফিচারটি আছে কিনা দেখে নিতে পারেন । স্মার্টফোন যেহেতু একটি কানেক্টেড ডিভাইস তাই সকলেই চান যে তাদের ফোনটা সারাক্ষণ নেটওয়ার্কের মাঝে থাকুক । কিন্তু স্মার্টফোনের ক্যাপাবিলিটি যেমন বেড়েছে সেই তুলনায় এর ব্যাটারি ব্যাকআপ টাইম খুব বেশি বাড়েনি । তাই বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যাটারিওয়ালা স্মার্টফোন কেনা উচিত । আজ ন দিচ্ছে। অবশ্য, ভ্যালু ফর মানি বলেও একটা কথা আছে । বেশি বাজেট হলে আপনি স্যামসাং গ্যালাক্সিগুগল পিক্সেল কিংবা অ্যাপল আইফোন কিনতে পারেন । 
Share:

0 মন্তব্য(গুলি):

Post a Comment

আমাদের ফেজবুক লাইক পেজ

এই সাইটের মোট দর্শক সংখ্যা

Translate this site